সরকার ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১সালের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সে লক্ষ্যে প্রথমেই সরকার বিভিন্ন সেবা সহজে, দ্রুততম সময়ে এবং স্বল্প খরচে সেবা গ্রহিতার দোরগোড়ায় পৌছানোর জন্য বদ্ধ পরিকর। ফলে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের গতানুগতিক সেবা পদ্ধতির পরিবর্তে উদ্ভাবনী আইডিয়ার মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সেবা চালুর প্রয়াশ চালানো হয়েছে এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে ইনোভেশন সংস্কৃতির চর্চা শুরু হয়েছে।
উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারের সেবাসমূহকে ম্যানুয়াল পদ্ধতি থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রুপান্তর করা হচ্ছে। সরকারের সেবা হচ্ছে জনকল্যাণমূখী এবং সেবাধর্মী। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের এমনি একটি সেবা হচ্ছে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সনদ প্রদান’।
মৌলভীবাজার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধ্যুষিত একটি জেলা। এ জেলায় প্রায় ৬৫০০০ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত জনসাধারণ বাস করেন। জেলা প্রশাসকের নিকট এ সেবা পেতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত জনসাধারণ প্রতিদিন গড়ে ৬/৮টি আবেদন করে থাকেন। এ আবেদন করার পূর্বে আবেদনকারীকে আরো ০৩টি দপ্তর থেকে প্রত্যয়ন গ্রহণ করে চুড়ান্ত সনদের জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করতে হয়। ফলে সরকারের এ সেবাটি পেতে প্রায়ই অধিক সময় ব্যয় হয় ও সেবা গ্রহীতাকে অনেক ভোগান্তির স্বীকার হতে হয়। তাই জেলা প্রশাসনের এই সেবাটি (ক্ষৃদ্র নৃ-গোষ্ঠী সনদ প্রদান) ম্যানুয়াল পদ্ধতির পরিবর্তে স্বল্প খরচে, স্বচ্ছতার সাথে এবং দ্রুততম সময়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রদান করার জন্য এই উদ্ভাবনী উদ্যোগ “অনলাইনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সনদ প্রদান” গ্রহণ করা হয়েছে।
উদ্ভাবনী উদ্যোগের মাধ্যমে সরকারের এই সেবা স্বল্প খরচে, দ্রুততম সময়ে এবং সহজে সেবা গৃহীতাকে প্রদান এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তৈরীকৃত ডাটাবেইজকে কাজে লাগিয়ে তাদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা এই উদ্যোগের অন্যতম লক্ষ্য। বাংলাদেশের নৃগোষ্ঠীগুলোর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ও আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে তাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, নৃগোষ্ঠীগুলোর এ সমৃদ্ধ সংস্কৃতির সামগ্রিক রূপটি বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী বাঙালিদের কাছে অনেকটাই অপরিচিত । তাই তাদের কৃষ্টি, কালচার ও সংস্কৃতি সংরক্ষণক্রমে তাদের জীবন ধারার উন্নয়ন ঘটিয়ে তাদের অবস্থার পরিবর্তন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
জেলা প্রশাসন মাঠ পর্যায়ে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দেশের অথর্নৈতিক উন্নয়ন ও জনগণের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করা। এক্ষেত্রে সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন । জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তর ও স্থানীয় সরকার বিভাগের মাধ্যমে জনগণ সেবা পেয়ে থাকেন। জেলা প্রশাসন এ সকল প্রতিষ্ঠানের কাজের সমন্বয় সাধন এবং সহযোগিতা করে জনগণের সেবা প্রদান সহজতর ও নিশ্চিত করে থাকে।
বতর্মান বিশ্বের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় জনগণের জীবনমান উন্নত করার জন্য তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর কর্মকান্ডের কোন বিকল্প নেই। তাই সরকারের সেবা প্রদান সহজীকরণের নিমিত্ত বিভিন্ন উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। তেমনি একটি উদ্ভাবনী উদ্যোগ হচ্ছে “অনলাইনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সনদ প্রদান”। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নের ফলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীভুক্ত বিভিন্ন উপজাতীদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সনদ পেতে আগে যেখানে ১০/১২দিন সময় লাগত, সেখানে এখন ১ (এক) দিনের মধ্যেই সনদ পাওয়া সম্ভব হবে।
তাছাড়া, জেলা প্রশাসন মৌলভীবাজারের District portal ও NGO Portal চালু রয়েছে এবং বর্তমানে “অনলাইনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সনদ প্রদান” (Nrigostisanad.gov.bd) চালুর মাধ্যমে জনগণ E-Governance পদ্ধতির আওতায় সম্পৃক্ত হয়ে জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল মৌলভীবাজার গঠনে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
নৃ-গোষ্ঠীর নাম | নৃ-গোষ্ঠীর নাম | নৃ-গোষ্ঠীর নাম |
---|---|---|
চাকমা | মারমা | ত্রিপুরা |
ম্রো | তঞ্চঙ্গা | বম |
পাংখোয়া | চাক | লুসাই |
কোচ | খিয়াং | খুমি |
সাঁওতাল | ডালু | মণিপুরী |
রাখাইন | গারো | হাজং |
খাসিয়া | ওরাঁও | বর্মন |
পাহাড়ী | মালপাহাড়ী | মুন্ডা |
কোল | মাহাতো/কুর্মিমাহাতো/বেদিয়ামাহাতো | কন্দ |
কড়া | গঞ্জু | গড়াইত |
গুর্খা | তেলী | তুরি |
পাত্রবাগদী | বানাই | বড়াইক/বাড়াইক |
বেদিয়া | ভিল | ভূমিজ |
ভূঁইমালী | মালো/ঘাসিমালো | মাহালী |
মুসহর | রাজোয়াড় | লোহার |
শবর | হুদি | হো |
খারিয়া/খাড়িয়া | খারওয়ার/খেড়োয়ার |